বহমান জীবন আমাদের কখনো ভাবায়,কখনো বা হাসায় কিংবা কাঁদায়।ঠিক তেমনি কিছুদিন আগে ভাবিয়ে তুলেছিলো এক প্রধান শিক্ষককে কান ধরিয়ে উঠ বস করার বিষয় নিয়ে।যেটা নিয়ে বেশ কয়েকদিন সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলাতে।আমি সেই ভিডিও টি দেখছি কিছুদিন আগে ।এক এলাকায় যাওয়ার পথে এক দোকানে খবরে দেখলাম এক ভদ্রলোককে কান ধরিয়ে উঠ বস করাচ্ছে কিছু মানুষরুপী পশু।সব পশুর তো আবার একটা লিডার থাকে ,তবে এখানে যে জন্তুটি লিডার হিসাবে কাজ করছে ,সে আর কেউ নয় ।সে আমাদের জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার চামচা স্থানীয় সেলিম এমপি ওসমান ।কাছে গিয়ে খবরটা সম্পূর্ন দেখলাম শুনলামও ।হুম ,বুঝে গেলাম,লজ্জাও পেলাম ।আসলে চরিত্রের মাঝে যদি সত্যের শিখা দীপ্ত না হয় তাহলে এমনেই ঘটে, জ্ঞান,গৌরব,শান্তি অভিজ্ঞতা সবই বৃথা।হতে পারেন বড় লোক কিংবা ক্ষমতাবান কিন্তু ভুলে যায়েন না আপনি পশুর মধ্যেই রয়ে গেছেন।কথায় আছে না যোগ্যতা যত অল্প তাহার আড়ম্বর তত বেশি।সত্যি ধার্মিক বোকারা অশিক্ষিত বোকার চেয়ে বেশি বোকা।একটি জাতিকে বিশ্বের দরবারে উপস্থিত করাতে পারে শিক্ষা,শিক্ষা মানুষের ভেতরের সকল অন্ধকার দূর করে মানব জীবনকে করে তোলে আলোক উজ্জ্বল ও সাফল্যমন্ডিত।আর সেই শিক্ষা নিরলস পরিশ্রমের মধ্যে মানুষের মাঝে বিতরন করে শিক্ষক।আর আজ শিক্ষককে কান ধরিয়ে উঠ বস।ছি! ছি! .কথাটা ভাবতেই কেমন জানি লাগে । একদিন এক দিদির পোষ্টে পড়েছিলাম তিনি নাকি লজ্জায় ভিডিও টি ২য় বার দেখতে পারেন নি । এতোটা লজ্জা পেয়েজেন যে, ভিডিওর লিংকটাও দিতে পারে নি ।শুনেই অবাক হয়ে গেয়েছিলাম।কিন্তু টিভির পর্দায় নিজের চোখে দেখে এতোটা অবাক আর খারাপ লাগলো যে, কিছু না লিখে থাকতে পারলাম না ।দেখলাম কিছু পাবলিকের সামনে সেই শিক্ষককে কান ধরে উঠ বস করাচ্ছে,উপস্থিত ছিল অনেক জনতা,শিক্ষার্থী আর শিক্ষক। সেই ৫১ বছর বয়সের প্রধান শিক্ষক শ্রদ্ধেহ শ্যামল কান্তি ভক্ত, ২২ বছর শিক্ষকতা পেশায় থেকে যিনি নিজের নাম ধরে রেখেছিলেন প্রধান শিক্ষক হিসাবে নারায়নগন্জ্ঞের, মদনপুর ইউনিয়ন, পিয়ার সাত্তার লতিফ হাই স্কুলে।দুংখের বিষয় আমরা আজ অসভ্য ।আজ জাতি কতটা অসভ্য হলে,এতোটা নিচে নামতে পারে সেটা বুঝাই যায়।আজ বিচার হলো,ওসমান চামচা শাস্তি পেলো,বিদ্যালয়ের কমেটির সব লুইচ্ছা বাতিল হলো,বড় লুইচ্ছানি পারভিন আক্তরকে বাঁশ দেওয়া হলো,হুম আমরা শিক্ষামন্ত্রির উপর খুশি কিন্তু শিক্ষামন্ত্রি সাহেব ! আপনি কি ভেবে দেখছেন সেই শিক্ষক এখন কেমন করে তার জ্ঞানের আলো বিতরন করবেন শিক্ষার্থীদের মাঝে ।আজ লজ্জায় বেঁচে থেকেও মূত্যুর সমতুল্য এখন সবার মাঝে ।আপনি ফিরিয়ে দিতে পারবেন তার যথেষ্ট সম্মান। ।আরো দেখলাম কান ধরে উঠ বস করতে করতে এক পর্যায়ে লুটিয়ে পরেন মাটিতে,আরেক ভদ্র লোক আঙ্গুলের ইশারায় হিসাব কষছিলেন উঠ বসের এক, দুই, তিন করে । ।সাথে সাথে আমার মনে পড়ল বাদশাহ আলমগীরের,শিক্ষাগুরুর মর্যাদা নামক কবিতার চরিত্র ,যে কিনা তার পুত্রকে পড়ার জন্য রেখেছিল একজনা গৃহশিক্ষিক,,বাদশাহ আলমগীরের পুত্র সেই শিক্ষকে হাত পা ধুয়ার পানি দিতেন।একদিন বাদশাহ আলমগীরের চোখে পড়িল তার পুত্র শুধু নিজ হাতে পানি ঢালছে আর শিক্ষক তার নিজের হাতে পা ধুয়ে নিচ্ছে।এই দৃশ্য দেখিয়া বাদশাহর মনে দাগ কাঁটিল ,আমি কি পুত্রকে আদপ কায়দা কিছুই শিখাতে পারি নাই ।তলব করে পাঠালো শিক্ষককে তার নিজ পুত্ররের দোষ দেখিয়ে দিতে ।।তখন শিক্ষক বলছিলেনঃ আজ হতে চির উন্নত হলো শিক্ষাগুরুর শির, বড়ই তুমি মহান উদার বাদশা আলামগীর ।।কিন্তু আজ শিক্ষক এতো বছর ধরে নিরলস পরিশ্রমে করে যাদের শিক্ষাদান করিয়ে মানুষ করলো আজ সেই পাবলিক যারা কিনা মাইকের বানোয়াট ঘোষনায় উম্মাদ হয়ে অপমান করলো সেই নিরহ শিক্ষককে।এই সভ্য জগতে এটা কি করে সম্ভব ।হুম ,সম্ভব. সবেই সম্ভব। ধর্মের আড়ালে সবেই সম্ভব।তারা এখন অপবাদ দিচ্ছে যে সেই শিক্ষিক নাকি ধর্মের কলিজায় আঘাত এনেছে।মূলত এর প্রমান কেই দিতে পারে নি সবার মুখ বন্ধ এখন।বিদ্যালয়ের কমেটির রাজনৈতিক ব্যপার নিয়ে জের ধরে ঘটনা।এখন সেটা ঢুকিয়েছে ধর্মে।কারন ধর্মেই পারে এর সঠিক বিচার করতে।।ধর্মের দোহাই ছাড়া তাদের কোন পথ ছিল না সেই শিক্ষককে বিতারিত করার।আগেই বলেছি ধর্মই পারে সব।ধর্মে থেকে কি করা যায় না ? ? সবেই করা যায় রে ভাই,পাওয়া যায় স্বর্গ সুখ ,করা যায় খুন ,জন্মে সিংসা,মনে ফলে অহংকার ।যতদিন এই ধর্ম নিয়ে রাজনৈতি আছে তত দিন মানুষ মরবেই।কিচ্ছু করার নেই।আচ্ছা কোন একজন লোক যদি ভুল করে তবে ধর্মের মানুষগুলো কি ভুলেই যায় ভগবান/ আল্লাহ/ ঈশ্বর সব বিচারকের চেয়ে বড় বিচাকরক ! তিনি পরম দয়াবান ,ক্ষমাশীল ..নাকি আছে কিনা এটা নিয়ে তারাও সন্দিহান ।
লেখাঃআই লিখছি


No comments:
Post a Comment